রূপান্তর রিপোর্ট: ঢাকা সিটি নির্বাচনে ২৮জন বাংলাদেশিকে বিদেশি পর্যবেক্ষক কার্ড দেয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিয়ম ভেঙে ইসির এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে খোদ এক সাবেক নির্বাচন কমিশনারও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটা ঠিক হয়নি। এসব কর্মকর্তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক পরিচয়কার্ড করা ঠিক না’।
বিদেশি পর্যবেক্ষকের কার্ড পাওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করলেও তারা বাংলাদেশি। অথচ আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষণ সংস্থার পক্ষ থেকে বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকাটাই শ্রেয়। দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক করা ঠিক হয়নি।
তিনি বলেন, “ভোট দেখতে পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর লোকজন নানা পরিকল্পনা নিয়ে আসেন, তাদের ট্রেনিংও রয়েছে। কিন্তু দূতাবাসের লোকজন যারা দেশীয়, তারা ভোট দেখতে যাবেন কেন? তাদের পর্যবেক্ষণে ঘাটতি থাকতে পারে।”
এ বিষয়ে সিইসি নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছেন, “বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য বিধিতে আছে তারা যেতে পারবে, তাদের নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা তো বাইরে থেকে আসেনি, তারা এখানকার।
সিইসি বলেন, “বিভিন্ন দূতাবাসে যারা আছেন, তারা এখানকার। তারা তালিকা দিলে আমরা পরীক্ষা করে তাদের অনুমতি দিতে পারি। সে অনুমতি আছে, গাজীপুরসহ বিভিন্ন সিটি নির্বাচনেও তারা পর্যবেক্ষণ করেছে। তাদের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই থাকবে। তারা যেন বিধির বাইরে কোনো রকম আচরণ করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা থাকবে।”
ইসির কাছ থেকে পাওয়া তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০টি দেশের মিশনের মোট ৭৪ জন পর্যবেক্ষক কার্ড পেয়েছেন, তবে এর মধ্যে ২৮ জন রয়েছেন বাংলাদেশি, যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করেন। বাকি ৪৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড পেলেও বাংলাদেশি ২৮ জনের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড দেওয়াটা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় (ধারা ১২: বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ) বলা হয়েছে- নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা/কূটনৈতিক মিশনের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হওয়ার বিধান নেই।
আন্তর্জাতিক সংস্থা/কূটনৈতিক মিশনের বিদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং স্থানীয় কর্মকর্তারা স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য হবে। বিদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী এবং স্থানীয়দের স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।