লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: গুজবেই সব শেষ হয়ে গেছে। ছোট্ট শিশু তাসলিমা তুবা (৪) হারিয়েছে তার প্রিয় মা তাসলিমা বেগম রেনুকে।
মায়ের কথা জিজ্ঞেস করলেই তুবা বলে, তার মা ড্রেস আনতে গেছে। তার জন্য জুস আনতে গেছে। মা আসবে।আবার বলে মা আমাকে ভাত খাইয়ে দিবে।
মঙ্গলবার দুপুরে তুবার বিষয়ে জানতে চাইলে তার খালা নাজমুন নাহার নাজমা এসব কথা বলেন।
রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে নানার বাড়িতে নানু ও খালাদের সঙ্গে আছে তুবা। মায়ের কথা ভুলছেই না সে। কাদছে মায়ের জন্য,মার হাতে খাবে, মার সঙ্গে ঘুমাবে এসব বায়না তার। মা ড্রেস নিয়ে ফিরবে এ অপেক্ষা করছে।
স্বজনরা জানায়, রেনুরা এক ভাই ও পাঁচ বোন। সে সবার ছোট। পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকায় আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছিলেন। প্রাইভেটও পড়াতেন তিনি।পারিবারিক কলহের কারণে দুই বছরআগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তার।
বিচ্ছেদের পর ছেলে তাসফিক আল মাহি (১১) বাবার সঙ্গে থাকে। তাসলিমা তুবা থাকতো মায়ের কাছে।আগামী বছরের জানুয়ারিতে বড় ভাই আলী আজগরের সঙ্গে আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল রেনুর।গণপিটুনিতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে ঢাকার উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০) প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে গুজবের কবলে পড়ে গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়।
পরদিন রোববার রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানের বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তার বোনের ছেলে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে।