বিচ্ছেদের এক বছর পর সাবেক স্বামীকে নিয়ে মুখ খুললেন শবনম

শবনম ফারিয়া। ডাক নাম তৃপ্তি। পরিচ্ছন্ন অভিনয়শিল্পী হিসেবে সুনাম রয়েছে তার। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন হারুন অর রশীদ অপুকে। কিন্তু বিয়ের ঠিক এক বছর ৯ মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে হালের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর।

বিচ্ছেদের সময় অপুর দিকে সরাসরি অভিযোগের কোনো আঙুল না তুললেও সম্প্রতি ফেসবুকে এক পোস্টে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন শবনম ফারিয়া।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলমার নির্যাতনের কারণে মৃত্যু প্রসঙ্গে অনেক আলোচনা শুরু হয়। আর সেই প্রসঙ্গ নিয়েই নিজের না বলা বছর দেড়েক আগের একটি ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন শবনম।

স্বামীর কাছে নির্যাতিত হয়েছেন অভিযোগ তুলে শবনব জানান, নির্যাতন করে হাত ভেঙে দিয়েছিলেন তার স্বামী। ফারিয়ার এই স্ট্যাটাস নিয়ে সাংস্কৃতিকঅঙ্গনে হইচই চলছে।

অপু অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, শবনমের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।

আরেকটি স্ট্যাটাসে ‘হাত ভাঙার’ ঘটনা নিয়ে ব্যাখ্যা দেন শবনম ফারিয়া। অভিনেত্রী জানান, হাত ভাঙার বিষয়টি অবশ্যই সত্যি, কিন্তু এমন না যে বিষয়টি অপু ইচ্ছে করেই করেছে! রাগারাগির একপর্যায় হাতাহাতিও হয়, তার পর আমার আঙুল ভেঙে যায়। তা হলে এখন উনি অস্বীকার কেন করছেন?

২০১৫ সালে ফেসবুকে ফারিয়া-অপুর পরিচয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেম। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা আংটি বদল করেন। ২০১৯ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি জমকালো আনুষ্ঠানিকতায় বিয়ে হয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপুর। আনুষ্ঠানিক বিয়ের ঠিক ১ বছর ৯ মাসের মাথায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন হন তারা।

বিচ্ছেদের সময় ফারিয়া বলেছিলেন, সাবেক স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে কোনো প্রকার তিক্ততা নেই। বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে, কিন্তু ভালোবাসা বা বন্ধুত্বে বিচ্ছেদ হয়নি। যত দিন বেঁচে আছি, আমাদের ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব থাকবে। শুধু বৈবাহিক বন্ধন থেকে আমাদের সম্পর্কের ইতি টানলাম। আমরা পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে চাই।

কিন্তু বিচ্ছেদের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করে শবনম ফারিয়া তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে কেন এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন- তা নিয়ে ভক্তদের মনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে।

ভক্তরা মনে করছেন, অপু গায়ে হাত তোলার কারণেই কি বিচ্ছেদের মতো পথে হাটতে বাধ্য হয়েছিলেন ফারিয়া! অবশ্য এরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।

তিনি বলেছেন, আমাদের আসলে সে অর্থে কখনও সংসারই করা হয়নি। কারণ আমাদের নিজেদের কখনও কোনো বাসা ছিল না! অপুদের তিন বেডের বাসায় ওর মা, ওরা চার ভাই, ভাবি, ভাতিজি এবং দুজন বুয়া থাকত! সেখানে আমার থাকার জন্য যে ঘর বরাদ্দ ছিল, সেটির সঙ্গে এটাচড কোনো ওয়াশরুম ছিল না। ওর মায়ের বেডরুমে সাতজনের সঙ্গে ওয়াশরুম শেয়ার করতে হতো। তাই আমি খুব বেশি দিন সেই বাসায় থাকিনি। আমরা তিন বোন, এত ছেলেদের ঘরে অ্যাডজাস্ট করতে সমস্যা হতো। তা ছাড়া আমার শুটিংয়ের জন্য অনেক কস্টিউম/প্রপ্স অনেক কিছু থাকে। আলাদা একটা কস্টিউম রুমই লাগে! তা ছাড়া আমার মায়ের বাসা আর তাদের বাসা কাছাকাছি হওয়ায় এবং দুজনেরই বাবা না থাকায় আমরা দুজন দুজনের মায়ের সঙ্গে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম! ফলে স্বাভাবিক ম্যারিড কাপলের মধ্যে যেসব ইন্টিমেসি থাকে তা আমাদের মধ্যে ছিল না! মূলত এ কারণেই আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্তে আসি। অবশ্যই এর বাইরে আরও হাজারটা কারণ তো আছেই! সেগুলোও পাবলিক প্লাটফরমে লিখে আর আলোচনা চাই না।

ফারিয়া ১৯৯০ সালের ৬ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তার পৈতৃক নিবাস চাঁদপুরে। তার বাবা পেশায় একজন ডাক্তার এবং মা গৃহিনী।

ফারিয়া টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কাজের মাধ্যমে মিডিয়া জগতে প্রবেশ করেন। এরপর ২০১৩ সালে তিনি অল টাইম দৌড়ের ওপর নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন।

২০১৮ সালে দেবী চলচ্চিত্র দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এই সিনেমায় তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ নবীন অভিনয়শিল্পী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।

ফারিয়ার নির্বাচিত টেলিভিশন নাটকসমূহ

অল টাইম দৌড়ের উপর, মানকি বিজনেস, প্রতীক্ষা, সে আসে ফিরে ফিরে, ডিজিটাল প্যারেন্ট, প্রণয়, গোলাপী ঘুড়ি, ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে, প্রেমের রঙ্গে রাঙাবো, ব্যাকবেঞ্চার, হিং টিং ছট, বনলতা, ইডিয়ট, না জাগতিক না পুরান, নিয়তির মুসকি হাসি, বৈরাগীর গান, বৃষ্টিদের বাড়ি, মিস্টার জেক্স, জরুরি বিবাহ, হানিমুন প্যাকেজ, আনার কলি, হোক কলরব, ব্লাস্ক ভার্স, মি. অ্যান্ড মিসেস রাইট, হ্যাপি এন্ডিং, ফানি ভিডিও, হেমন্তের বৃষ্টি, বুক ভরা ভালবাসা, বুক ভরা ভালবাসা।

SHARE