অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য, চকচকে বর্ণ, বিনিময়ের সহজ মাধ্যম, কাঠামোর স্থায়িত্বের কারণে অতি মূল্যবান ধাতু হিসেবে সোনার ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই। প্রাচীনকালে সব জাতিতেই সোনার ব্যবহার ছিল। ইনকাদের কাছে সোনা ছিল গুপ্ত ধাতু তথা সূর্য দেবতার ধাতু। তাদের মন্দিরগুলোতে বিপুল পরিমাণ সোনা রক্ষিত থাকত।
১৬০০ সালে রাশিয়ার খনি থেকে সোনা উত্তোলন শুরু হয়। তবে এর পরিমাণ খুব বেশি ছিল না। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে সেখানে সোনা উত্তোলনের পরিমাণ অনেকগুণ বেড়েছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের প্রতিবেদন অনুযায়ী চীন বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণের গ্রাহক, বিশ্ব বাজারের ৩০ শতাংশ চাহিদা চীনের। ২০০৭ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ চীন। ওই বছর দক্ষিণ আফ্রিকাকে পেছনে ফেলে এই শীর্ষ স্থানে যায় চীন।
কিন্তু এই সোনার সঙ্গে যে ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যের বিষয় জড়িয়ে আছে তা আমরা অনেকেই জানি না। সোনার গুণগত মান সঠিক না হলে শরীরের উপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি কখনো কখনো মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।
সাধারণত বাজারে কেডিএম সোনা বিক্রি করা হয়। এক্ষেত্রে সোনার গুণগত মান যাচাই করে সার্টিফাই করা সোনা অর্থাৎ হলমার্ক সোনা কেনা বা ব্যবহারে ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে না।
খাঁটি সোনাকে অলংকার উপযোগী করতে এর সঙ্গে ক্যাডমিয়াম নামক এক ধরনের ধাতু মেশানো হয়। ৯২:৮ অনুপাতে সোনা এবং ক্যাডমিয়াম মিশ্রিত করা হয়।
খাঁটি সোনা খুব নরম হওয়ায় তা অলংকার তৈরির অনুপযুক্ত থাকে। তাই এর সঙ্গে অন্য ধাতু মিশিয়ে অলংকার তৈরির উপযুক্ত করা হয়। যাকে খাদ বলা হয়।
এছাড়া মানগত কারণে সোনাকে কয়েকভাগে ভাগ করা হয়েছে- ২৪ ক্যারেট, ২৩ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট, ১৮ ক্যারেট, ১৪ ক্যারেট এবং ১০ ক্যারেট। সোনায় ক্যাডমিয়াম মেশানোর ফলে সোনার মান বজায় থাকলেও এতে করে অলংকার তৈরির কারিগর এবং ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই সোনায় এই ক্যাডমিয়ামের ব্যবহার নিষিদ্ধ।
বিশেষজ্ঞদের মতে ক্যাডমিয়াম হচ্ছে ক্ষতিকারক ধাতু। এটি শরীরে দীর্ঘদিন প্রবেশ করতে থাকলে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে করে শরীরে ক্যানসার এবং কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও ফুসফুস এবং হাড় ক্ষতিগ্রস্ত করে। অনেক সময় শ্বাসকষ্ট, কিডনি অকার্যকর হয়ে যায় এবং পুরুষত্বহীনতার কারণও হয়ে দাঁড়ায়।