ঢাকায় ব্যাঙ দিয়ে মশা মারার ‘হাস্যকর’ উদ্যোগ!

মশার কামড়ে অতিষ্ট রাজধানীবাসী। কোনোভাবেই মশার অত্যাচার থেকে মুক্তি মিলছে না। ওষুধে মশা নিধন না হওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবার রাজধানীর জলাশয়ে ব্যাঙ ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

এরইমধ্যে পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে ১০টি জলাশয়ে হাজার দশেক ব্যাঙাচি অর্থাৎ ব্যাঙের পোনা ছাড়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত বছর মশার লার্ভা নিধনে ঝিল, লেক ও পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার হাঁস এবং তেলাপিয়া মাছ ছেড়েছিল ডিএসসিসি। তবে ৯০ ভাগ হাঁস গায়েব হয়ে গেছে।এর মধ্যে গত বছরের তুলনায় এবার নগরে মশা বেড়েছে চার গুণ।

ডিএসসিসির ভাষ্য, মশার লার্ভা নিধনে তাদের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। এখন তারা ডিএসসিসির আওতাধীন ঝিল, লেক, পুকুর এবং জলাশয়ে কয়েক হাজার ব্যাঙ ছেড়েছেন। এসব ব্যাঙ মশার লার্ভা নিধনে সক্ষম হবে।

ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, মাসখানেক আগে মশা নিধনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছিলেন ডিএসএসসি মেয়র শেখ তাপস। ওই বৈঠকেই ব্যাঙ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত, তা ডিএসসিসি নিজেও অবগত নয়।

ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে আমরা এই ব্যাঙগুলো ছেড়েছি। ব্যাঙগুলো বড় হলে মশার লার্ভা খেয়ে ফেলবে। এতে নগরে মশার উপদ্রব কমবে। তবে আমরা এখন পর্যবেক্ষণ করব এই ব্যাঙগুলো বাঁচে কিনা। যদি সফল হই, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে কবে, কোন লেকে, কতো সংখ্যক ব্যাঙ ছাড়া হয়েছে, তা তিনি জানাতে পারেননি।

তবে সিটি করপোরেশনের এ ধরনের কার্যক্রম হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ এবং পরিবেশবিদরা। তারা জানান, বিশ্বের কোনো দেশে ব্যাঙ দিয়ে মশা নিধনের নজির নেই। ঢাকার লেক, জলাশয় ও পুকুরের পানি অনেক দূষিত। কোনো প্রজাতির ব্যাঙ এই পানিতে বাঁচতে পারবে না। তাই এই উদ্যোগ ভালো ফল দিতে পারবে না। এমন উদ্যোগ নেয়ার আগে কীটতত্ত্ববিদের পরামর্শ নেওয়ার দরকার ছিল।

দক্ষিণ সিটির এ ধরনের উদ্যোগকে হাস্যকর মন্তব্য করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে লেকে বা পুকুরে ব্যাঙ ছাড়া যেতে পারে। তবে ঢাকার পুকুরের পানি যে পরিমাণে নোংরা, সেখানে ব্যাঙ বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই। যদি কিছু ব্যাঙ বেঁচেও যায়, তাহলে খুব বেশি লার্ভা খেয়ে সুফল বয়ে আনতে পারবে বলে মনে হয় না।

SHARE