আবিদুর রহমান পলাশ। কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার এক সময়ের হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। বন্ধুরা সবাই তাকে ‘আফ্রিদি’ বলে ডাকত। দর্শনীয় সব ছক্কার মার দেখতে বিমোহিত হত করিমগঞ্জের ক্রীড়ামোদিরা। সে যখন প্র্যাকটিস করত তখনও ভিড় জমে যেত দর্শকদের।
বোলারদের যমদূত পলাশ ক্রিজে থাকা মানেই আফ্রিদির মত রানের চাকা সচল থাকা। স্কোরার হয়রান হয়ে যেত লেখতে। একটি চার লেখতে লেখতে আরেকটি ছয়। তাও নয়নাভিরাম।
উচ্চতায় যেমনই থাকুক পলাশের ছক্কা মানে বিশাল ছক্কা। করিমগঞ্জের হাইস্কুল মাঠে খেললে বল খোঁজার জন্য আগেভাগেই পোস্ট অফিস এবং নরসুন্দা নদীর দ্বারে পোলাপাইন দাঁড় করিয়ে রাখা হত। কান্দাইল, দেহুন্দা, গুজাদিয়া, চাতল, নানশ্রী, জাফরাবাদ, নিয়ামতপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বড় কোন টুর্নামেন্ট হলে পলাশকে নিয়ে কাড়াকাড়ি লেগে যেত। হায়ারে খেলতে গিয়ে কত জায়গায় দর্শকদের মন ভরিয়ে দিয়েছে পলাশ তার ইয়ত্তা নেই।
এমন ক্রিকেটার যদি বিকেএসপিতে যোগ দিত তবে অনুর্ধ্ব-১৪ বা অনুর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পড়ে যেত নিমিষেই। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, পলাশ এখন আর মাঠে যায় না। ক্রিকেটের ব্যাট-বল তাকে আর টানে না। অন্য ভাইদের মতই সেও এখন জীবিকার টানে ব্যবসায় মন দিয়েছে।
তার বড় ভাই জাকির, আনার, মানিক সবাই করিমগঞ্জের সেরা সেরা ক্রিকেটার ছিলেন। পলাশের সবার বড় উজ্জ্বল ভাই প্রতিদিন জোকার মাঠে পশ্চিম নয়াকান্দি থেকে দলবল নিয়ে মাঠে যেতেন। নিজে তেমন একটা পারফর্মেন্স না করলেও ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে তিনি অতুলনীয় ছিলেন। একাধারে কোচ, টিম ম্যানেজার, অধিনায়ক সবকিছুর দায়িত্বই যেন তিনি নিজে নিয়ে নিতেন। ভুল করলে কড়া শাসনও বাদ যেত না। আহারে ক্রিকেটমোদী এমন পরিবারে জন্ম নিয়েও পলাশের ক্রিকেটার হয়ে উঠা হল না!