করোনাভাইরাস মহামারীতে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশগুলো এখন অসহায় ক্ষুদ্র এ প্রাণীর গুচ্ছ আক্রমণে। এপ্রিলের মধ্যবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২০ লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে ১৬ লাখই ইউরোপ-আমেরিকার।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে করোনার আঘাত। সারা বিশ্বের আক্রান্তের প্রায় ৩১ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের।
করোনাভাইরাস নিয়ে ১৭ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এতে ২০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন ১ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনে শুরু হয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এরপর এটি ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ৬৭ দিনের মাথায় এক লাখ লোকের করোনা শনাক্ত হয়। ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর মার্চের শেষ দিকে আক্রান্তের হার বাড়তে শুরু করে। তিন মাসের মাথায় ৩১ মার্চ গিয়ে ৮ লাখ ছাড়ায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা। আর এপ্রিলের ১৫ দিনেই করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১২ লাখ।
প্রথম ১০ লাখ পর্যন্ত ৫২ শতাংশ রোগী ছিল ইউরোপের। ২০ লাখ পার হওয়ার পর এটি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ শতাংশে। এর মধ্যে বেড়ে গেছে উত্তর আমেরিকায়। এই অঞ্চলে ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে রোগীর সংখ্যা। এ দুই মহাদেশ মিলিয়েই রোগী আছে ৭৯ শতাংশের বেশি।
বাড়া-কমার মধ্যেই আছে শীর্ষ ১০ দেশ
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য বলছে, মাত্র ১০টি দেশে আছে ৭৮ শতাংশ করোনা রোগী। এর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেন, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইরান, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক ও বেলজিয়াম।
উত্তর আমেরিকায় করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৮৪ হাজার। এর মধ্যে ৬ লাখ ৪০ হাজার রোগী শুধু যুক্তরাষ্ট্রে। আর কানাডায় আছে ২৮ হাজারের বেশি। এই দুটি দেশ বাদ দিলে এই অঞ্চলের ২২টি দেশের মধ্যে মেক্সিকো, পানামা ও ডমিনিকান রিপাবলিক ছাড়া আর কোনো দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা হাজার পার হয়নি। শুধু আক্রান্তের দিক থেকেই নয়, মৃত্যুর দিক থেকেও সবার উপরে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় ২৭ হাজার মানুষ।
তবে এমআইটির গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরের দিকের রাজ্যগুলোর তাপমাত্রা কম এবং সেখানে সংক্রমণের হার অপেক্ষাকৃত উষ্ণ দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর তুলনায় বেশি।