আগামী নির্বাচনে পোস্টার ও মাইকিং নিষিদ্ধ হচ্ছে

রূপান্তর রিপোর্ট: নির্বাচনে পোস্টার ও মাইকিং নিষিদ্ধে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী আচরণবিধিতে এটি আগামীতে অন্তর্ভুক্ত করার আভাস দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনাররা। নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার, মাইকিং ছাড়াও শোডাউন নিষিদ্ধেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তবে এটি সুশিল সমাজ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আচরণবিধি সংশোধন করবে ইসি।

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সভাকক্ষে এক বৈঠক এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে রূপান্তরকে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন সূত্র।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার ও মাইকিং ব্যবহার করতে না দেওয়া এবং শোডাউন নিষিদ্ধের ব্যাপারে বৈঠকে একটি লিখিত প্রস্তাব দেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। ওই প্রস্তাবে সিইসিসহ অন্য সব কমিশনার সম্মতি দেন।

লিখিত প্রস্তাবে কী কী বিষয় তুলে ধরা হয়েছে জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে বর্তমানে প্লাস্টিকের লেমিনেটিং করা পোস্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হচ্ছে। এছাড়া কেবল কাগজের তৈরি আড়াই হাজার টন পোস্টারও যদি ড্রেনে যায়, তাহলে জলাবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করবে। ঢাকা সিটি নির্বাচনে প্লাস্টিকে মোড়ানোর পোস্টারগুলো সরিয়ে নেওয়া হলেও পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকানো যাবে না। কেননা, এগুলো পোড়ালে পরিবেশ দূষণ হবে। মাটিতে ফেললেও পরিবেশ দূষণ হবে। তাই পোস্টার ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে নতুন করে ভাবা প্রয়োজন।’

ইসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারে মাইকিং ব্যবহারের আইনি অনুমতি থাকলেও বাস্তবে যেভাবে লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হয়, তাতে দুপুর ২টা থেকে ৮টার সময়সীমা কেউ মানে না। একাধিক স্পিকার ব্যবহার করা হয় উচ্চমাত্রায়। ফলে ব্যাপক শব্দ দূষণের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যাপক ক্ষতি হয়। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারের নামে মিছিল, শোডাউন করা হয়। এতে করে জনসাধারণ বিরক্ত হয়। এ ছাড়া এতে যানজটের সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। এজন্য পরিবেশবান্ধব, শব্দ দূষণমুক্ত এবং যানজটহীন নির্বাচনী প্রচার ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে আমার অবস্থান।’

এসব ব্যাপারে নির্বাচনী আইন সংস্কার কমিটির চেয়ারম্যান ও নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছি। ফুল কমিশন মাইকিং, পোস্টার ও শোডাউনবিহীন নির্বাচনী প্রচারের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেজন্য আমরা আচরণবিধি সংশোধন করতে চাই। তবে এই ব্যাপারে আমাদের অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা হবে। আমাদের চিন্তা-চেতনা তাদেরকে জানানো হবে। পরিবেশের ক্ষতির বিষয়টি তাদেরকে জানানো হবে। শেষে সবার মতামতের ভিত্তিতে পোস্টার, মাইকিং এবং শোডাউন ছাড়া অন্য কোনোভাবে সামনে আগানো যায় সেই চিন্তা করা হবে। সব শেষে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন করা হবে। পরিবেশ দূষণ, শব্দ দূষণ ও যানজটমুক্ত নির্বাচনী প্রচারের ব্যাপারে ইসি একমত। এটার জন্য যা যা করা দরকার আমরা সবাই করব।’

SHARE